আশুলিয়ায় অসামাজিক কাজে রাজি না হওয়ায় প্রবাসীর স্ত্রীকে বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানি

আশুলিয়ায় অসামাজিক কাজে রাজি না হওয়ায় প্রবাসীর স্ত্রীকে বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানি

আশুলিয়ায় প্রবাসীর স্ত্রী আকলিমা আক্তার (৩৫) নামে এক সুন্দরী নারীকে অবৈধ অসামাজিক কাজে রাজি না হওয়ায় প্রকাশ্য দিবালোকে বিবস্ত্র করে মারধোর ও শ্লীলতাহানি এবং তার একমাত্র ছেলের চোখ উৎপাটনের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার বেলা ১১টায় আশুলিয়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানিয়েছেন ওই নারী। তাকে শারিরীক নির্যাতন, শ্লীলতাহানি ও তার একমাত্র ছেলের চোখ উৎপাটনের চেষ্টার বিরুদ্ধে ভাসুর জিন্নাত আলী, জিন্নাত আলীর ছেলে মোস্তাক, ভাসুর সালাম মন্ডল ও দেবর ইলিয়াস গংয়ের বিরুদ্ধে লিখিত বক্তব্য প্রদান করেন। আকলিমা আশুলিয়া থানাধীন নিশ্চিন্তপুর তাজরীন ফ্যাশন সংলগ্ন প্রবাস ফেরত আলম মন্ডলের স্ত্রী।

আশুলিয়ায় অসামাজিক কাজে রাজি না হওয়ায় প্রবাসীর স্ত্রীকে বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানি

এ ব্যাপারে আকলিমা তার বক্তব্যে বলেন, জমি সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টায় আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর তাজরীন ফ্যাশনের উত্তর পাশে তাদের একটি মুদি দোকানে এসে তার ছেলে আশরাফুল কে অস্ত্রের মুখে ধরে নিয়ে যায় তার ভাসুর জিন্নাত আলী মন্ডল, সালাম মন্ডল, দেবর ইলিয়াস মন্ডল ও জিন্নাত আলীর ছেলে মোস্তাক মন্ডলের নেতৃত্বে ৮/১০ চিহ্নিত সন্ত্রাসী। এসময় আশরাফুলের আর্তচিৎকারে সে ঘর থেকে বের হয়ে ছেলেকে রক্ষার জন্যে এগিয়ে যান এবং বাঁধা দেন। এসময় উল্লেখিতরা তার ছেলেকে শুইয়ে দিয়ে তার চোখ উৎপাটনের জন্যে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। ছেলের এ অবস্থা দেখে তিনি ঝাপিয়ে পড়ে তাদের বাঁধা দেন। এক পর্যায়ে ছেলেকে ছেড়ে দিয়ে তারা তাকে মারধোর করে তার পরিধেয় বস্ত্র সম্পূর্ণ খুলে ফেলে শ্লীললতা হানির চেষ্টা চালায়। এসময় তার স্বামী আলম হোসেন মন্ডল এসে বাঁধা দিলে তাকেও পিটিয়ে জখম করে। পরে প্রতিবেশিরা এসে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। ছেলে আশরাফুলের চোখের জখমের জন্য রাজধানীর আগারগাঁও চক্ষু ইনিষ্টিটিউটে নিয়ে চিকিৎসার জন্যে ভর্তি করেন। ছেলে আশরাফুল সুস্থ হয়ে উঠলে থানায় এ সংক্রান্ত বিষয়ের জন্যে মামলা করতে আসেন। ঘটনায় ইয়ারপুর ইউনিয়নের সাবেক যুবলীগ নেতা মোশারফফ হোসেন মুসা সহ কয়েকজন আওয়ামীলীগের নেতার ফোন পেয়ে থানা পুলিশ মামলাটি গ্রহণ করেনি। বাধ্য হয়ে আজ আমি সাংবাদিকদের সামনে হাজির হয়েছি। বিবাদীদের ভয়-ভীতির কারনে ছেলে আশরাফুল কলেজে যেতে পারছে না। তাকে পেলে ওরা মেরে ফেলবে বলে বাড়ির আশপাশে সার্বক্ষণিক পাহাড়া দিচ্ছে।

এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তার স্বামী আলম বিদেশে থাকাকালীন তার ভাসুর জিন্নাত আলী এক রাতে(১৯৯৬ সালের ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টায়) তার কক্ষে ঢুকে দরজা আটকিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষন করে। এভাবে সে জোরপূর্বক প্রায়ই এ ধরনের অপকর্ম করতো। একপর্যায়ে এ অবৈধ কর্মকান্ড আমি আমার পিতা-মাতা ও আত্মীয় স্বজনকে জানাই। এমনকি আমার স্বামীকে ফোন করে জানিয়ে স্বামীর প্রতিষ্ঠিত নিজস্ব ভিটা ছেড়ে পিত্রালয় চলে যাই। এরপর তার স্বামী বিদেশ থেকে এসে সব অত্যাচার নির্যাতনের কথা শুনে তাকে তার পিতার বাড়িতে আনতে যায়। আমি আমার স্বামীর সাথে চলে আসি। এরপর একের পর এক শত্রুতা অতিমাত্রায় চলতে থাকে। এ শত্রুতার জেরের কারনে আমি থানায় গিয়ে জিন্নাত আলী গংদের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডাইরি করি। ওই ডাইরির বিষয়ে থানার উপপরিদর্শক মোমিনুল উভয় পক্ষকে নোটিশ দেন। নোটিশ নিয়ে থানার কনস্টবল আমীর আলী ২৫ডিসেম্বর সাড়ে ১২টায় বিবাদীদের কে নিশ্চিন্তপুর বাড়িতে গিয়ে তাদের হাতে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিবাদীরা কনেষ্টবল আমীর আলী ও অনেক লোকের সামনে তার ছেলে আশরাফুলের চোখ তুলতে শুইয়ে দেয় এবং তাকে বিবস্ত্র করে মারধোর ও প্রকাশ্য শ্লীলতা হানির মতো ঘৃণ্য চেষ্টা চালায়। আমার ঘরের বারান্দায় ২ বস্তা বাংলা মদ রেখে আমার ছেলেকে পুলিশ ডেকে ধরানো, শরীকি জমি নিয়ে ষড়যন্ত্রসহ আমাদেরকে হয়রানির উদ্দেশ্যে একের পর এক ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করছে বিবাদীরা।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে আকলিমা আরো বলেন, এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার পর থানায় অভিযোগ না নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে মিমাংসা করে নেয়ার জন্য তাকে বলা হয়। এজন্য এ বিষয়টি ইয়ারপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সৈয়দ আহম্মদ মাস্টার, আশুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন মাদবরসহ একাধিক আওয়ামী লীগের নেতার কাছে অভিযোগ দেয়া হলেও তার কেউই বিবাদীদের বিরুদ্ধে শালিস করতে এগিয়ে আসেনি।

তাই বাধ্য হয়ে সামাজিক অশান্তি, বিভিন্ন হয়রানি, শারিরীক নির্যাতন ও লোলুপ দৃষ্টি থেকে রেহাই পেতে আপনাদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এ সংবাদ সম্মেলন করছি।

পরিবারটি বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলেও আকলিমা জানায়। এসময় তার সাথে তার চাচা শ^শুর আলহাজ¦ লালু মিয়া, ছেলে আশরাফুল ও তার স্বামী আলম উপস্থিত ছিলেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment